July 31, 2025 6:34 pm

শাহাদাত রাসএল এর ছোটগল্প: ‘পারাপার’

শাহাদাত রাসএল

গ্রামের সবচেয়ে প্রবীণ নিবারণ সাধুর সাথে আলাপ করেও হাস্নাপুর গ্রামটার নামকরণের ইতিহাস জানা যায়নি। আমরা ধরে নিই হাসনাহেনা ফুলের নাম থেকেই এই গ্রামের নাম করণ করেছিলেন কোন ফুলপ্রেমী জমিদার। বাংলাদেশ আর ভারতের বর্ডারের কাছাকাছি গ্রাম। কাছাকাছি মানে হরিপদ সাহুর বাড়ী থেকে বর্ডারের দূরত্ব এগারো কিলোমিটার। মাঝখানে শীতলা নদী। নদীর নাম শীতলা করণের কারণটা এই গ্রামের কিশোর কিশোরীরা পর্যন্ত জানে। সে অনেককাল আগে এখানকার জমিদার ছিলো প্রতাপ নারায়ণ।

 

প্রবল ক্ষমতাশালী প্রতাপ নারায়ণের একমাত্র কন্যা ছিলো শীতলা রানী। জমিদার কন্যা বড় হয়ে প্রেমে পড়েছিলো মুসলমান নায়েবপুত্র মেহবুবের। দুজনার গোপন অভিসার চলতো এই নদীতেই। জমিদারের ছাউনি দেয়া ময়ূরাক্ষী নৌকা দুলে উঠতো দুজন মানুষের প্রেমে। নদীর ঢেউয়ের আওয়াজ দাম্ভিক জমিদার প্রতাপ নারায়ণের কানে যেতে সময় লাগেনি। এক আমাবশ্যার রাতে প্রতাপ নারায়ণের লাঠিয়াল বাহিনী জমিদারের নির্দেশে নায়েব ও নায়েবপূত্র মেহবুবকে গলায় পাথর বেঁধে এই নদীতেই ডুবিয়ে দেয়। সেই খবর গোপন করে প্রচার করা হয় যে নায়েব আর তার পূত্র জমিদারের খাজনার টাকা চুরি করে ভেগেছে। শীতলা রানী এদিকে মেহবুবের বিরহে শয্যাশায়ী কিন্তু সত্য চাপা দেয়া কি এতোই সহজ। ঘটনার কিছুদিন পরেই জেলেদের জালে উঠে আসে পিতা পুত্রের লাশ।

এই খবর যেদিন শীতলা রানী জানতে পারে সেদিন ভরা পূর্নিমার রাত। সে রাতেই নদীতে ডুবে আত্মহত্যা করলো শীতলা রানী। ঠিক সেভাবেই আত্মহত্যা করলো যেভাবে তার পিতা প্রতাপ নারায়ণ খুন করেছিলো মেহমুবকে। কন্যার আত্মহুতির পর জমিদার বুঝতে পারেন যে কতবড় ভুল তিনি করেছেন। সেই আত্মগ্লানিতেই বিছানা নেন প্রতাপ নারায়ণ। তখনই তিনি কন্যার নামে এই নদীর নামকরণ করেন শীতলা নদী।

প্রচলিত গল্পটা এমন। আসলে বাংলাদেশের বেশীরভাগ গ্রাম ও নদীর নামকরণের পেছনে রূপকথার খেলা থাকে। যেমন শীতলা নদীর যে গল্প দেখা যাবে ঠিক একই গল্প নাম পাল্টে আরো চার পাঁচটা নদীর সাথে জড়িত।

হাস্নাপুর গ্রামের দক্ষিণ দিকের শেষ মাথায় হরিপদ সাহুর চৌদ্দপুরুষের বসত ভিটা। চৌদ্দপুরুষ কথাটা শুনতে যতোটা বিস্তৃত আদতে হরিপদর পরিবার ততোটাই সংক্ষিপ্ত। হরিপদর পরিবারে হরিপদ ছাড়া মাত্র দুইজন মানুষ। স্ত্রী মাধবী আর ছয় বছরের ছেলে সঞ্জয় । অবশ্য হরিপদর সামনে যদি বলা হয় যে পরিবারে তিনজন সদস্য তবে রেগে বোম হয়ে যায় হরিপদ। হরিপদর হিসেবে পরিবারের সদস্য সংখ্যা চার।

হরিপদ রেগে বলবে, “ইডা ক্যামুন হিসাব কনদিহি দাদা এইযে লালীরে এতোবছর পাইলা বড় করলাম ওরে বাদ দিয়া পরিবার হবি ক্যামনে ?”

কথাটা সত্যি ভাবার মতো। একবিন্দুও বাড়িয়ে বলেনি হরিপদ। সেবার যখন স্মরণকালের সবচেয়ে বড় বন্যাটা হলো সেই সেবার একরাতে আজিজ মিয়ার আড়তে মাত্র পানের ঝুড়িগুলো তুলে দিয়ে দোকান ঝাড়পোছ করছিলো হরিপদ। এমন সময় কালু দৌড়াইয়ায় আইসা খবর দিলো যে মাধবীর প্রসব বেদনা শুরু হইছে। পানি ভাঙ্গতেছে। শুইনাই বাড়ির দিকে দৌড় লাগালো হরিপদ। কিছুদূর যেতেই হোসেন মিয়ার বাড়ির পাশের ডোবাটার কিনারে কাদা পানি মেখে একাকার হয়ে পড়েছিলো লালী। হরিপদর দিকে তাকিয়ে কাঁদছিল।

হরিপদ সেই কান্নাকে এড়িয়ে যেতে না পেরে লালীকে কোলে নিয়ে বাড়িতে ঢুকতেই খবর পায় প্রথম সন্তান সঞ্জয়ের জন্মের। তারপর থেকে লালী আর সঞ্জয় হরিপদর দুই কোলে দুজন বড় হয়েছে। এখন দুজনেরই বয়স ছয় বছর। তাই হরিপদর কাছে সঞ্জয় আর লালী দুজনেই ওর সন্তান। বরং গতছয় বছরে সঞ্জয়ের চেয়ে লালীকেই বেশি সময় কাছে পেয়েছে হরিপদ। সঞ্জয় তো মায়ের সাথে বাড়িতেই থাকতো কিন্তু লালী হরিপদর সাথেই গঞ্জে যেতো। হরিপদ যখন আজিজ মিয়ার আড়তে কাজ করতো তখন লালী আড়তের আশেপাশেই ঘুরঘুর করতো।

AP1GczOOR5SC94fBPyiOGukIIhtzYdCKUzNmlRthuAniTreEQ0mR1ds DGuaQMqlGPYThBfYYt0X4IXesTJjxS8g2y6bUqW zzoN8FB83RXqEcImud4iDfeZbEn7Ag7mj1EIdcrculYsQQYdpQbj0IBSXNA=w950 h633 s no gm?authuser=1

লালীকে অস্বীকার করা হরিপদর পক্ষে সম্ভব না। অস্বীকার করেওনি হরিপদ। একাত্তরের জুন মাসের মাঝামাঝি সময়। তখন ঢাকার কেন্দ্র থেকে পাকিস্তানি ঘাতক বাহিনীর থাবা প্রসারিত হয়ে পড়েছে প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত। যখন খবর পাওয়া গেলো যে সাদুল্লাপুরে রাতের অন্ধকারে নিরস্ত্র গ্রামবাসীদের উপর হামলা করেছে পাক বাহিনী।

পুরো গ্রাম আগুন আর রক্তের লালে ছেয়ে গেছে। সোমত্ত পুরুষ থেকে শিশু সবাইকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে । আর গ্রামের মেয়েদেরকে গণধর্ষণের পাশাপাশি জিপে তুলে ক্যাম্পে নিয়ে গেছে তখন আর স্থির থাকতে পারেনি হাস্নাপুর গ্রামবাসী। গ্রামের মোড়ল সালাম মাদবরের উঠানে গোপন বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় যে যেভাবে আছে সেভাবেই রাতের অন্ধকারে বর্ডার পাড়ি দিয়ে আগরতলার আশ্রয় শিবিরে চলে যাবে। অনেকেই বলছে যে সেখানে ভারত সরকার সবধরনের সহায়তা দিচ্ছে।

হরিপদ আর মাধবী মাটিতে মাদুরের উপর মুখোমুখি বসে আছে। হরিপদর সামনে ভাতের থালা।  দুই নলা ভাত মুখে তুলেছিলো কিন্তু এর বেশি আর গলা দিয়ে নামেনি। মাধবী স্বামীর দিকে তাকায়। হরিপদ ল্যাম্পের আলোর দিকে তাকিয়েই আছে। বিছানায় ঘুমিয়ে আছে সঞ্জয়। দরজার কাছেই একটা চটের উপর বসে আছে লালী। মাধবী হরিহরের নিরবতা দেখে কিছুটা শঙ্কিত হয়। নিরবতা ভাঙতে চায়,

– কি ভাবতাছো?
– কিছুনা
– এখন কি করবা তয়?
– সবাই যা করবো তাই করতে হইবো । একলা একলা তো মরা যাইবোনা। যাই হয় সবার লগে থাকাই ভালো
– ঘর বাড়ি সব ?
– বাইচা থাকলে সব হইবো আবার
হরিপদ কথাগুলো বলার সময় একবারের জন্যেও ল্যাম্প থেকে চোখ ফিরায় নি। মাধবী বুঝতে পারে যে প্রতিবাদ করে লাভ নেই।

পরেরদিন রাতে হরিপদ যখন ঘরের দুয়ারের মাটিতে কপাল ঠেকিয়ে প্রণাম জানায় তখন মাধবীর কোলে সঞ্জয়। মাধবীর আরেক কোলে একটা কাপড়ের পুঁটলি। পাশেই হরিপদর দিকে তাকিয়ে  দাঁড়িয়ে আছে লালী। হরিপদ ঘুরে দাঁড়িয়ে মাটি থেকে একটা টিনের ট্রাঙ্ক মাথায় তুলে নেয়। আর হাতে নিয়ে নেয় আরেকটা ট্রাঙ্ক।  হাঁটতে শুরু করে। পেছনে পেছনে অন্য তিনজন।

বাজারের কাছাকাছি বটতলার মুখে এসে দেখা যায়  সালাম মাদবরকে কেন্দ্র করে আরো জনা ত্রিশেক লোক দাঁড়িয়ে আছে । যারযার কাছে এতোকালের সঞ্চিত বক্সপেটরা।  অন্ধকারে একেকজন মানুষকে একেকটা ছায়ার মতো লাগে।

উত্তর পাড়ার দিক থেকে কজন লোক এগিয়ে আসতেই সালাম মাদবরের ইশায়ার সবাই চলতে শুরু করে। হরিপদ একবার মাধবীর দিকে তাকিয়ে মাধবীর মাথায় হাতটা ছুঁইয়ে দেয়। মাধবী সঞ্জয়কে কোলে নিয়ে হাঁটার ক্লান্তিতে বসে একটু বিশ্রাম নিচ্ছিলো। মাধবীর পাশেই শুয়ে ছিলো লালী।

মাথায় হাতের স্পর্শ পেয়ে মাথা উঁচু করে হরিপদর দিকে তাকায় মাধবী। হরিপদ দুই হাতে দুইটা ট্রাঙ্ক তুলে নিয়ে অন্ধকারে মাটির পথ ধরে হাঁটতে শুরু করে। মাধবী আর লালীও চলতে শুরু করে। জনা চল্লিশ লোক সারিবদ্ধভাবে হাঁটছে। উত্তর পাড়ার আয়নাল কাজী পাঁচ ওয়াক্ত নামাজী মানুষ। হাঁটতে হাঁটতে অন্ধকারে লালীর পায়ে পাড়া দিয়ে ফেলে আয়নাল কাজী। আচমকা আঘাতে ঘেউঘেউ করে চেঁচিয়ে ওঠে লালী। আয়নাল কাজী কিছুটা ঘাবড়ে যায়। হরিপদর উদ্দেশ্যে ক্ষোভ ঝাড়ে

– মিয়া মানুষ বাঁচেনা আর তুমি আইছো কুত্তা লইয়া

অন্ধকারেই হরিপদর কপালে ভাঁজ পড়ে যায় । ইচ্ছে হয় একটা ধমক লাগিয়ে দিতে , “ওর নাম লালী”। কিন্তু মুখে কিছুই বলেনা। এই পরিস্থিতিতে তর্ক বাঁধাতে চায়না। একটু সরে দাঁড়িয়ে বলে
– আয়নাল ভাই তুমি আগে যাও

আয়নাল কাজী দুইপা এগিয়ে লালী আর হরিপদর গা বাঁচিয়ে সামনের দিকে চলে যায়। যেতে যতে বলে যায়
“হারাম পশুডা শইলে লাইগা আমার ওজুটা নষ্ট হইলো”

হরিপদ কোন উত্তর করেনা। একবার লালীর দিকে তাকিয়ে আবার হাঁটতে শুরু করে। মাধবীও থমকে দাঁড়িয়েছিলো পুনরায় হাঁটতে শুরু করে।

ওদের শরণার্থী বহরটা যখন শীতলা নদীর পাড়ে পৌঁছায় তখন ফজরের আজান দিতে আর বেশি দেরি নেই।

দুইটা নৌকা ঘাটে অপেক্ষায় ছিলো। প্রথম নৌকাটায় উঠে যায় বেশীরভাগ মানুষ। হরিপদ স্ত্রী সন্তান নিয়ে কিছুটা দ্বিধায় পরে যায়। তারপর হরিপদ মাধবীর কোল থেকে সঞ্জয়কে নিজের কোলে তুলে নেয়। মাধবীকে হাত ধরে নৌকায় তুলে দেয়। হরিপদ নৌকায় ওঠার জন্য পা বাড়াতেই পেছন থেকে ধূতির পেছনের দিকটায় কামড়ে ধরে লালী। হরিপদ সঞ্জয়কে মাধবীর কোলে ফিরিয়ে দিয়ে লালীকে কোলে তুলে নেয়।

নৌকা চলছে।

নৌকা শীতলা নদীর অন্ধকারের ছায়া কেটে কেটে এগিয়ে চলে । বর্ডারের কাছাকাছি পৌঁছাতে সকাল সাতটা বেজে যায়। যদিও আরো আগেই পৌঁছে যাবার কথা ছিলো কিন্তু উজান ঠেলে নৌকা যেনো এগুতে চায়না। বর্ডারে এসে সবাই বর্ডার পাড়ি দিয়ে ঢুকে যাচ্ছিলো। ইন্ডিয়ান বর্ডার গার্ডেরা দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু কাউকেই কিছু জিজ্ঞাসা করছেনা। ইন্দিরা গান্ধীর সরাসরি নির্দেশ আছে শরণার্থী আশ্রয় দেবার ব্যাপারে। তারপর থেকেই বর্ডার খুলে দেয়া হয়েছে।

AP1GczPypcwdwsSuLrsQlCZW B6SIhFwb9wsSp93z7LdFkS6K3de76PsGf0AzQedkfMPd7S0SXyZ3fI7lqPkXTkbyuAJgYFk7kmcE5WcSIsqdM8bXeuLSJEsCuNawEJ46nUMMeRW2efqiZx0nTs3Ejp1qx4=w950 h633 s no gm?authuser=1

হরিপদ সঞ্জয়কে কোলে তুলে নিয়েছে। একটা পেঁটরা এখন মাধবীর হাতে। লালী নিজের মতো হরিপদকে অনুসরণ করছে। হরিপদ বর্ডার পাড় হবার সময় আচমকা পেছনে ‘হাট ইধার সে’ ধমক শুনে থমকে দাঁড়ায়। ঘুরে একজন খাকী পোশাকের বর্ডার গার্ডের দিকে চোখ যায়। বর্ডার গার্ড রাইফেলের বাট দেখিয়ে লালীর পথ আটকে দিয়েছে। হরিপদ দ্রুত পায়ে গার্ডের কাছে যায়,

– স্যার ওয় লালী, আমার লগে আইছে
গার্ড একবার হরিপদর পা হতে মাথা পর্যন্ত দেখে,
– কুকুর নিয়ে যাওয়া যাবেনা

হরিপদ একবার লালীর দিকে তাকায়। লালীও হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত তাই একটু দাঁড়াবার সুযোগ পেতেই বসে পড়েছে। বসলেও নজর হরিপদর দিকে। হরিপদ আবার গার্ডের দিকে তাকায়,
– স্যার অনেক বছর ধইরা পালছি তো, ওরে নিয়া যাই
– বলেছি তো কুকুর নিয়ে যাওয়া যাবেনা। শুধু মানুষের যাবার অনুমতি আছে
– স্যার ওর নাম লালী
– নাম দিয়ে কি হবে ? কুকুর যাবেনা ব্যাস। আগার কুত্তে কি লিয়ে ইতনা মুহাব্বাত হ্য তো মাত যাও

হরিপদ গার্ডের ভাঙ্গা ভাঙ্গা হিন্দি বুঝতে পারেনা। তবে চোখ দেখে বুঝতে পারে যে গার্ড রেগে গেছে। একটু দূরে দাঁড়িয়ে থাকা মাধবীর সাথে চোখাচোখি হয়। মাধবী মাথা নাড়িয়ে হরিপদকে বর্ডার পাড় হবার ইশারা করে। হরিপদ অসহায় ভাবে লালীর দিকে তাকায়। লালী উঠে দাঁড়িয়ে গা ঝাড়া দিলো। হয়তো মালিকের সাথে আবার যাত্রা শুরুর প্রস্তুতি নিলো লালী। লালীর দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে আবার মাধবীর দিকে তাকায় হরিপদ। মাধবীর চোখে ক্ষোভ আর অনুনয়ের এক মিশ্র অভিব্যক্তি। হরিপদ গার্ডের দিকে তাকিয়ে একপা এগিয়ে যায়

– স্যার আমার একখান কথা আছিল
– যো বোলনা থা বোল দিয়া…

হরিপদ একবার কোলে থাকা সঞ্জয়কে বুকের সাথে চেপে ধরে। তারপর একটু উবু হয়ে একটা হাত রাখে লালীর মাথায়। লালী মালিকের চেনা আদরে কুঁইকুঁই করে ওঠে। মাথাটা ঘুরিয়ে জিভ দিয়ে হরিপদর হাতটা চেটে দেয়। হরিপদ বুঝতে পারে লালীর ক্ষুধা লেগেছে।
– কি হইলো জলদি আহো। বেবাক মাইনশে যাইতাছেগা

মাধবীর ডাক শুনে মাথা তুলে তাকায় হরিপদ। দাঁড়িয়ে সঞ্জয়কে বুকে চেপে ধরে লালীর দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে চোখ মুখ শক্ত করে এগিয়ে যায় বর্ডারের দিকে। একবার পেছনে লালীর কুঁইকুঁই ডাক শুনতে পায়। তারপরই ঘেউঘেউ করে উঠে লালী। তাকাবে না ভেবেও আচমকাই ঘুরে তাকায় হরিপদ। গার্ড লালীকে রাইফেলের বাট দিয়ে আঘাত করেছে। আরেকবার আঘাত করার জন্য রাইফেল তুলে ধরেছে । ভয়ে একটু দূরে দাঁড়িয়ে অসহায় ভাবে হরিপদর দিকে তাকিয়ে আছে লালী। লালী এখনো ভাবছে হরিপদ ঠিকই এই গার্ডের কাছ থেকে ওকে বাঁচিয়ে দেবে হরিপদ। এতো বছরে এই বিশ্বাসটা কখনো ভাঙ্গেনি লালীর।

– স্যার অরে মাইরেন না
বলতে বলতে কান্নায় গলা আটকে আসে হরিপদর। গলা কান্নায় বুজে আসায় হরিপদর কথাগুলো স্পষ্ট হয় না। অনেকটা লালীর গলার কুঁইকুঁই আওয়াজের মতোই লাগে।

শাহাদাত রাসএল
লেখক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা

তারিখঃ ১২ এপ্রিল, ২০২৫

Click here to read this article in English

[মাইনোরিটিওয়াচে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব বক্তব্য]

অভিযোগে কিশোর গ্রেপ্তার
ধর্ম

রংপুরে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে কিশোর গ্রেপ্তার, ১৫টি হিন্দু বসতঘর লণ্ডভণ্ড: আতঙ্কে সনাতন পল্লী

রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার বেতগাড়ি ইউনিয়নের এক সনাতন ধর্মাবলম্বী কিশোরকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নবী মুহাম্মদ–কে কটূক্তি করার অভিযোগে গ্রেপ্তারের ঘটনাকে কেন্দ্র

Read More »
১২ বছরের শিশুকে ধর্ষণ 12-Year-Old Child Raped
শিশু

খাবারের লোভ দেখিয়ে ১২ বছরের শিশুকে ধর্ষণ ও বেল্ট দিয়ে পিটিয়ে হত্যা

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে এক আবাসিক হোটেলে ১২ বছর বয়সী এক শিশুর মরদেহ উদ্ধারের পর তদন্তে ধর্ষণ ও পাশবিক হত্যাকাণ্ডের মর্মান্তিক বিবরণ

Read More »
বাংলাদেশ ব্যাংকের Bangladesh Bank’s Controversial Dress
নারী

বাংলাদেশ ব্যাংকের বিতর্কিত পোশাকবিধি নির্দেশনা: নারী কর্মীদের পোশাকে বিধিনিষেধ

বাংলাদেশ ব্যাংকে সম্প্রতি তাদের সব স্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য একটি নতুন পোশাকবিধি জারি করেছে, যা দেশব্যাপী আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত

Read More »
ঢাকায় হাসপাতালের পেছনেChild Raped Behind Hospital
শিশু

নির্মম নির্যাতন: ঢাকায় হাসপাতালের পেছনে ৯ বছরের পথশিশু ধর্ষণের শিকার

রাজধানী ঢাকার মহাখালী এলাকায় এক ভয়াবহ বর্বরতার শিকার হয়েছে নয় বছরের এক পথশিশু। সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, রাত আনুমানিক ৮টার

Read More »
হোটেলে আটকে শিশু ধর্ষণের Madrasa Teacher Arrested for Abducting
শিশু

নৃশংস অপরাধ: অপহরণ করে হোটেলে আটকে শিশু ধর্ষণের অভিযোগ, মাদ্রাসা শিক্ষক গ্রেপ্তার

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলায় এক মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে উঠে এসেছে মর্মান্তিক ও নৃশংস এক অভিযোগ। ১০ বছর বয়সী এক শিশু শিক্ষার্থীকে

Read More »
পাথর দিয়ে নির্মম হত্যা
মতামত

বাংলাদেশে সহিংসতার নতুন রূপ: যুবদলের হাতে পাথর দিয়ে নির্মম হত্যা—রাষ্ট্র কী করছে?

একটি রাষ্ট্র তখনই শক্তিশালী হয়ে ওঠে, যখন আইনের শাসন, মানবিকতা ও ন্যায়বিচার সবকিছুর উপরে থাকে। কিন্তু আজকের বাংলাদেশে এসব শব্দ

Read More »
Scroll to Top