যশোরের ঝিকরগাছায় এক সংখ্যালঘু গৃহবধূর উপর ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিকরগাছা উপজেলার শংকরপুর ইউনিয়নের বকুলিয়া গ্রামে। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির নাম আলাউদ্দিন সরদার (৫০)। তিনি একই উপজেলার বকুলিয়া গ্রামের মৃত আক্কাস আলীর ছেলে।
ঘটনার বিবরণ
ঘটনার সূত্রপাত ১২ মার্চ, রাত সাড়ে ১১টার দিকে। ওই দিন রাতে বকুলিয়া গ্রামের এক সংখ্যালঘু গৃহবধূ (৩০) বাড়ির টয়লেটে যান। এই সুযোগে বাড়িতে প্রবেশ করেন আলাউদ্দিন সরদার। গৃহবধূ টয়লেট থেকে ফিরে এলে তিনি ধারালো গাছিদা (কৃষি কাজে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র) দেখিয়ে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ সময় গৃহবধূর চিৎকার শুনে বাড়ির অন্যান্য সদস্যরা বেরিয়ে আসেন। আতঙ্কিত আলাউদ্দিন গামছা, টর্চলাইট এবং হাতে থাকা ধারালো গাছিদা ফেলে দ্রুত পালিয়ে যান।
উল্লেখ্য, ঘটনার সময় গৃহবধূর স্বামী এবং দুই মেয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। ফলে বাড়িতে তিনি একা ছিলেন।
অভিযোগ দায়ের ও তদন্ত
পরের দিন, ১৩ মার্চ, গৃহবধূ ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর তিনি ঝিকরগাছা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলার নম্বর ০৬।
পুলিশের তদন্তে উঠে আসে যে, আলাউদ্দিন সরদার স্থানীয়ভাবে পরিচিত ব্যক্তি। ঘটনার পর তিনি পালিয়ে যান। তবে পুলিশের তৎপরতায় ১৪ মার্চ রাতে সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার রাইটা গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ও আদালতে সোপর্দ
ঝিকরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বাবলুর রহমান খান জানান, অভিযুক্ত আলাউদ্দিন সরদারকে ১৪ মার্চ রাতে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর ১৫ মার্চ সকালে তাকে যশোর আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
স্থানীয় প্রতিক্রিয়া
ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানিয়েছেন। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যরা এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং দ্রুত বিচার চেয়েছেন।
পুলিশের বক্তব্য
ঝিকরগাছা থানার ওসি বাবলুর রহমান খান বলেন, “আমরা ঘটনাটি খুব গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আইনানুগ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তদন্ত চলছে। আমরা নিশ্চিত করব যে, ভুক্তভোগীকে ন্যায়বিচার দেওয়া হবে।”
এই ঘটনা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। তবে ভুক্তভোগীর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে আইনি প্রক্রিয়া কতটা কার্যকর হবে, তা এখন দেখার বিষয়।
তথ্যসূত্র: সময়ের কন্ঠস্বর
প্রকাশের তারিখ: ১৫ মার্চ, ২০২৫
Click here to read this article in English