মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলায় এক গৃহবধূকে নৌপথে শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার পথে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হতে হয়েছে। পুরাতন মাওয়া ফেরিঘাট থেকে ট্রলারে ওঠার পর এ ভয়াবহ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই ভুক্তভোগী থানায় অভিযোগ দায়ের করলে পদ্মা সেতু উত্তর থানা-পুলিশ অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।
ঘটনা ও গ্রেপ্তার
মুন্সিগঞ্জের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শামসুল আলম সরকার জানান, বুধবার রাত আনুমানিক সাড়ে ৭টার দিকে পদ্মা সেতু এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা বৃহস্পতিবার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন এবং এরপর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
পুলিশের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, রোববার সন্ধ্যায় ভুক্তভোগী নারী পুরাতন মাওয়া ফেরিঘাট থেকে শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তখন অভিযুক্ত আবু বকর সিদ্দিক ও জামাল মোল্লা তাকে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে ট্রলারে তুলে নেয়।
ধর্ষণের ঘটনা
পথিমধ্যে আরও দুই অভিযুক্ত ইয়ামিন ও জব্বার ট্রলারে ওঠে। সন্ধ্যা আনুমানিক সাড়ে ৭টার দিকে পদ্মা নদীর মাঝপথে অভিযুক্ত চারজন মিলে গৃহবধূকে ধর্ষণ করে। রাত ৯টার দিকে তারা মাওয়া পুরাতন কোস্টগার্ড স্টেশনের কাছে ভুক্তভোগীকে নামিয়ে দিয়ে দ্রুত সরে যায় এবং কাউকে কিছু না বলার জন্য হুমকি দেয়।
পুলিশি তদন্ত ও অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার
ভুক্তভোগী নারী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় রাতেই স্বামীর সঙ্গে পদ্মা সেতু উত্তর থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ তাৎক্ষণিক তদন্ত শুরু করে, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং সত্যতা যাচাইয়ের পর মামলা রুজু করে।
সোমবার পদ্মা নদীর তীর থেকে অভিযুক্ত জামাল মোল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেয়া স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ইয়ামিন ও জব্বারকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ সুপার জানান, অভিযুক্ত তিনজনই আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে এবং আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘটনার সময় ব্যবহৃত নৌকা এবং অন্যান্য আলামত উদ্ধার করা হয়েছে।
তদন্ত অব্যাহত
এখনও পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিশ্চিত করেছে যে, অপরাধীদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনা হবে এবং ভুক্তভোগী ন্যায়বিচার পাবেন।
এ ঘটনা নারীদের নিরাপত্তার জন্য আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে। ভুক্তভোগীর সাহসিকতা প্রশংসনীয় এবং এমন অপরাধের পুনরাবৃত্তি রোধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।
তথ্যসূত্র: independent