চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় বেলজিয়ামপ্রবাসী এক যুবকের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইসলাম ধর্ম ও নবী মুহাম্মদ –কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ ওঠার পর ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয় জনতা তার বসতঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। পরে থানায় ধর্ম অবমাননার আইনে মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার খাদেরগাঁও ইউনিয়নের উত্তর নাগদা গ্রামের বাসিন্দা মেহেদী হাসান অনন্ত কয়েক বছর ধরে বেলজিয়ামে অবস্থান করছেন। গত শনিবার রাতে তিনি তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকে নবী মুহাম্মদ –কে ও ইসলাম ধর্ম নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য প্রকাশ করেন। বিষয়টি দ্রুত স্থানীয় মহলে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
পরবর্তীতে মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) বিকেলে স্থানীয় ইমাম-ওলামা ঐক্য পরিষদের খাদেরগাঁও ইউনিয়ন শাখার উদ্যোগে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। কর্মসূচির আগে বিক্ষুব্ধ জনতা মেহেদী হাসানের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে তার বসতঘর ভাঙচুর করে এবং আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে ঘরের ভেতরের মালামাল সম্পূর্ণ পুড়ে যায়।
খবর পেয়ে মতলব দক্ষিণ উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় মতলব দক্ষিণ উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা চালায়। তবে আগুনে ঘরটি আংশিক ধ্বংস হয়ে যায়।
এ ঘটনায় জামায়াতে ইসলামীর মতলব পৌর যুব বিভাগের সাধারণ সম্পাদক এ এম ইদ্রিস খান বাদী হয়ে মতলব দক্ষিণ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে প্রবাসী মেহেদী হাসানকে। মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালেহ আহাম্মদ গণমাধ্যমকে বলেন, “ইসলাম ধর্ম ও মহানবী (সা.)–কে নিয়ে ফেসবুকে কটূক্তির অভিযোগে ধর্ম অবমাননার আইনে মামলা হয়েছে। মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। প্রবাসী আসামিকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে দেশে আনার চেষ্টা চলছে।”
এদিকে মতলব দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমজাদ হোসেন বলেন, “আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)–কে নিয়ে যেকোনো অবমাননাকর মন্তব্য দণ্ডনীয় অপরাধ। তবে এ ধরনের ঘটনায় আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া সঠিক নয়। অভিযুক্তকে আইনের আওতায় এনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা সবাইকে আহ্বান করেছি শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ জানাতে এবং অভিযোগ যথাযথভাবে জমা দিতে।”
ঘটনাস্থলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুমতাহিনা পৃথুলা ও মতলব দক্ষিণ থানার ওসি সালেহ আহাম্মদ উপস্থিত থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখেন।
তারিখ: ২০ আগস্ট, ২০২৫
এ বিষয়ে বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন: prothomalo, banglatribune, ittefaq
Click here to read this article in English