বাংলাদেশের ফেনী জেলার শর্শদি ইউনিয়নে থাইল্যান্ডের এক নারী নাগরিকের (৪০) দায়ের করা ধর্ষণ ও প্রতারণার মামলায় মোখসুদুর রহমান (৪৮) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অভিযোগে বলা হয়েছে, হংকংয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাংলাদেশে এনে ওই নারীকে ধর্ষণ ও মারধর করা হয়েছে।
ঘটনার পটভূমি
ভুক্তভোগী নারী জন্মসূত্রে ভারতীয় হলেও বর্তমানে থাইল্যান্ডের নাগরিক। তিনি ২০২০ সাল থেকে হংকংয়ে একটি মুদির দোকানের ব্যবসা পরিচালনা করছিলেন। সেখানে মোখসুদুর রহমানের সঙ্গে তার পরিচয় হয়, যা পরবর্তীতে প্রেমের সম্পর্কে রূপ নেয়। মোখসুদুর তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেন এবং যৌথভাবে ব্যবসা শুরু করেন। এই সময়ে তিনি মোখসুদুরকে ব্যবসা ও বাংলাদেশে জমি কেনার জন্য ২ লাখ ১০ হাজার হংকং ডলার এবং কিছু স্বর্ণালঙ্কার দেন।
পরবর্তীতে মোখসুদুর ভিসা জটিলতায় হংকংয়ে গ্রেপ্তার হলে ওই নারী তাকে মুক্ত করতে সহায়তা করেন। কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে মোখসুদুর বাংলাদেশে ফিরে আসেন। তাদের মধ্যে যোগাযোগ অব্যাহত থাকে এবং মোখসুদুর তাকে স্ত্রী হিসেবে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে ২০২৪ সালের ২২ মার্চ তিনি প্রথমবার বাংলাদেশে আসেন। এরপর ১২ অক্টোবর আবার বাংলাদেশে এসে মোখসুদুরের বাড়িতে অবস্থান করেন, যেখানে তাকে ধর্ষণ করা হয়।
মামলার বিবরণ
সর্বশেষ ২০২৫ সালের ১৩ এপ্রিল তিনি আবার বাংলাদেশে এসে মোখসুদুরের ফেনীর বাড়িতে গেলে তাকে মারধর করে ঘর থেকে বের করে দেওয়া হয়। এ সময় তার মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলা হয়, যেখানে তাদের ব্যক্তিগত ছবি ও তথ্য সংরক্ষিত ছিল। এই ঘটনার পর তিনি ফেনী সদর মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। মোখসুদুর রহমান ছাড়াও মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আরও দুজনকে আসামি করা হয়েছে।
পুলিশি পদক্ষেপ ও তদন্ত
মোখসুদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ভুক্তভোগী নারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা ফেনী জেনারেল হাসপাতালে সম্পন্ন হয়েছে এবং তার ২২ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশ মামলাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছে।
আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট ও মানবাধিকার
এই ঘটনা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি উদাহরণ। বিদেশি নাগরিকদের সঙ্গে প্রতারণা ও যৌন সহিংসতা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও বাংলাদেশের ভাবমূর্তিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর আরও সক্রিয় ভূমিকা প্রয়োজন।
তারিখ: ১৬ এপ্রিল, ২০২৪
এ বিষয়ে বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন: bdnews24, prothomalo,
Click here to read this article in English