April 26, 2025 2:45 am

কুষ্টিয়ায় ৩ টি খাবার হোটেলে আগুন: নারী কর্মীদের উপর ‘তৌহিদি জনতার’ নির্মম সহিংসতার চিত্র

হোটেলে আগুন11

৬ এপ্রিল ২০২৫ বিকেলে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার মহিষাডাঙ্গা-বিত্তিপাড়া এলাকায় ‘তৌহিদি জনতা’ নামে পরিচিত একদল উগ্র জনতা তিনটি খাবার হোটেল ও একটি চায়ের দোকানে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর চালায়। হোটেলগুলোতে কর্মরত নারী কর্মীদের দ্বারা অনৈতিক কর্মকাণ্ড (দেহ ব্যবসা) চলছে এমন অভিযোগ তুলে এই তাণ্ডব সংঘটিত হয়, যদিও স্থানীয় অনেক বাসিন্দা এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও সাজানো বলে মনে করেন। ঘটনাটির অন্তর্নিহিত কারণ, সংশ্লিষ্ট সামাজিক-রাজনৈতিক প্রভাব এবং নারী কর্মীদের ভূমিকা ও পরিস্থিতি নিয়ে চলছে নানা বিশ্লেষণ। নিচে ঘটনাটির বিস্তারিত অনুসন্ধানমূলক বিবরণ, বিভিন্ন পক্ষের বক্তব্য ও প্রাপ্ত তথ্যসহ উপস্থাপন করা হলো।

ঘটনাপ্রবাহ ও প্রেক্ষাপট

৬ এপ্রিল ২০২৫, রবিবার বিকেল ৪টার দিকে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের মহিষাডাঙ্গা এলাকায় হঠাৎ করেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ওই এলাকার ইকরামুল ইসলামের ভাই ভাই হোটেল, শেকম মণ্ডলের হোটেলসহ মোট তিনটি খাবারের হোটেল এবং মহির আলীর একটি চায়ের দোকানে একদল ধর্মীয় উগ্র লোক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। টিনের তৈরি এসব অস্থায়ী দোকান ঘর মুহূর্তে আগুনের লেলিহান শিখায় ভস্মীভূত হয়ে যায়।

হামলাকারীরা নিজেদেরকে ‘তৌহিদি জনতা’ বলেই পরিচয় দেয় এবং হোটেলগুলোর বিরুদ্ধে “অসামাজিক ও অনৈতিক কার্যকলাপের আস্তানা” তৈরির অভিযোগ তোলে। হোটেলে রাখা নগদ টাকা-পয়সাও লুট করা হয় বলে ভুক্তভোগী কর্মচারীরা জানান । পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে খবর পেয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) থানার পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে যায় এবং সন্ধ্যার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

উক্ত এলাকাটি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার মহিষাডাঙ্গা-বিত্তিপাড়া মাঠ সংলগ্ন, যেখানে গত কয়েক বছরে মহাসড়কের পাশে প্রায় অর্ধশত ছোট খাবারের হোটেল গড়ে উঠেছে। এসব হোটেলে দূরপাল্লার যানবাহনের চালক-হেলপার ও স্থানীয় খেটে খাওয়া নিম্নআয়ের মানুষ অল্প খরচে খাবার খেতে আসেন । হোটেলগুলোর রান্না-বান্না, বাসন ধোয়া ও পরিষ্কারসহ বিভিন্ন কাজে দীর্ঘদিন ধরেই কিছু নারী কর্মচারী কাজ করে আসছেন।

স্থানীয় লোকজন এই বিষয়টিকে স্বাভাবিক কর্মসংস্থান হিসেবে দেখলেও এলাকার একটি ধর্মীয় মৌলবাদী মহল শুরু থেকেই “নারী কেন হোটেলে কাজ করবে” মর্মে আপত্তি জানিয়ে আসছিল । হোটেল মালিকরা সেই আপত্তিতে কর্ণপাত না করায় ক্ষুব্ধ ওই ধর্মীয় গোষ্ঠী অবশেষে নিজেদের হাতে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বলে মালিকপক্ষের অভিযোগ। তাদের দাবি অনুযায়ী, উক্ত উগ্রবাদী দলটিই ৬ এপ্রিল বিকেলে সংঘবদ্ধভাবে এসে হোটেলগুলোতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ চালায়।

অভিযোগ: ‘অনৈতিক কার্যকলাপের আস্তানা’

স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতার মূল অভিযোগ ছিল, এসব খাবার হোটেলের আড়ালে আসলে চলছিল যৌন ব্যবসা তথা অনৈতিক কার্যক্রম। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, হোটেল মালিকরা বাইরের বিভিন্ন এলাকা থেকে কম বয়সী (মধ্যবয়সী) নারী এনে রান্নার কর্মচারীর আড়ালে পতিতাবৃত্তি চালাচ্ছিলেন। “কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের কোলঘেঁষে ১১ মাইল থেকে বিত্তিপাড়া পর্যন্ত এলাকায় বেশ কয়েকটি হোটেলে রমরমা দেহ ব্যবসা চলে, কিন্তু প্রশাসন দেখেও চোখ বন্ধ করে রাখে”, এমনটাই জানান প্রতিবাদকারী স্থানীয়রা। তাদের দাবি, হোটেল-মালিকেরা পুলিশ ও প্রশাসনকে মোটা অংকের টাকা ঘুষ দিয়ে ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন ধরে এই অবৈধ কার্যকলাপ চালিয়ে আসছিলেন । বহুবার স্থানীয়দের পক্ষ থেকে এই অনৈতিক কাজ বন্ধের অনুরোধ জানানো হলেও মালিকপক্ষ কর্ণপাত করেনি বলে অভিযোগ উঠেছে

স্থানীয় এক বাসিন্দা কামাল হোসেন বলেন, “এলাকার যুবসমাজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। যারাই এই কাজ (ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ) করেছেন ভালো করেছেন। প্রশাসনের নাকের ডগায় অনৈতিক কাজ হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।”* তাঁর বক্তব্য থেকে স্পষ্ট, এলাকাবাসীর একটি অংশ আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়াকে সমর্থন করছে এই যুক্তিতে যে প্রশাসন যথাসময়ে ব্যবস্থা নেয়নি। এলাকাবাসীর অভিযোগ অনুযায়ী এসব হোটেলে আশেপাশের তরুণেরা বিপথগামী হচ্ছিল, এলাকার সুনাম ক্ষুণ্ণ হচ্ছিল এবং অভিভাবকদের মধ্যে সন্তানদের নৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল । দীর্ঘদিন ধরে এমন পরিস্থিতিতে ক্ষোভ তৈরী হওয়ায় শেষমেশ জনতার একাংশ চরম পদক্ষেপ নেয়।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত ‘তৌহিদি জনতা’ গ্রুপের পক্ষ থেকে সরাসরি গণমাধ্যমের কাছে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি না পাওয়া গেলেও, হামলাকারীদের বক্তব্যের সারমর্ম – নারী কর্মচারীদের দিয়ে দেহ ব্যবসা চালানোর প্রতিবাদ হিসেবেই তারা এসব হোটেল ও দোকানে আগুন দিয়েছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত অনেকেই দেখেছেন, হামলাকারীরা “নারী দিয়ে অসামাজিক কাজ চলে এখানে” চিৎকার করতে করতে হোটেলগুলোর বেড়া-ছাউনি টেনে নামিয়ে আগুন লাগায়। স্থানীয় কিছু মসজিদ ও ধর্মীয় মহল থেকেও আগে থেকে এসব হোটেল সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য প্রচারিত হচ্ছিল বলেও অনেকে ইঙ্গিত দিয়েছেন। ফলে এলাকায় একটা উত্তেজনাপূর্ণ পরিবেশ তৈরি হয়েছিল যেখানে অনেকে মনে করেছিলেন হোটেলগুলো ভাঙচুর করে দেওয়া উচিত।

পাল্টা বক্তব্য: মিথ্যা অপবাদ নাকি ভিন্ন স্বার্থ?

তবে ঘটনাটির আরেকটি দিকও রয়েছে। বহু স্থানীয় বাসিন্দা ও ভুক্তভোগী কর্মচারী এসব “অসামাজিক কার্যকলাপের” অভিযোগকে অস্বীকার করেছেন এবং হামলার নেপথ্যে অন্য কোনও স্বার্থ জড়িত থাকতে পারে বলে মনে করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় ব্যক্তি জানান, ছাপড়া টিনের বেড়ার সাধারণ খাবার হোটেলগুলোতে দেহ ব্যবসার মত কিছু চলে বলে তারা মনে করেন না

বরং তাদের সন্দেহ, এর পিছনে চাঁদাবাজি বা জমি দখলের মতো অভ্যন্তরীণ বিরোধ কাজ করতে পারে। স্থানীয় এক অটোরিকশা চালক আব্দুল্লাহ জানান, এই হোটেলগুলোতে এমন অসামাজিক কিছু তিনি দেখেননি; নিম্নবিত্ত শ্রমজীবী মানুষেরাই এখানে নিয়মিত ভাত-মাছ খেতে আসেো। তার ভাষায়, “আমরা অনেকেই নিয়মিত এই হোটেলে খাই। দেহ ব্যবসার মতো কিছু থাকলে কি পরিবার নিয়ে এখানে কেউ আসতে পারত?” – স্থানীয় এই প্রশ্নগুলো ইঙ্গিত করে যে সবার দৃষ্টিভঙ্গি একরকম নয়।

হামলার শিকার হোটেলগুলোর মালিকরা শুরু থেকে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে চাননি। ভয় বা অন্য কোনো কারণে “নেপথ্য কারণ জানতে চাইলে হোটেল মালিকদের কেউই মুখ খুলতে রাজি হননি” বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় । আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত একটি হোটেলের এক কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, “অকারণে আমাদের ওপর এ অপবাদ দেওয়া হয়েছে। যারা হামলা করেছে, তারা হোটেলের ক্যাশ বাক্স ভেঙে টাকা-পয়সাও নিয়ে গেছে”, যা স্রেফ ধর্মীয় অনুভূতির প্রতিবাদ নয়, বরং লুটপাটের উদ্দেশ্যকেও ইঙ্গিত করে। এসব তথ্য স্থানীয় অনেকের মনে সংশয় তৈরি করেছে যে সত্যিই কি নৈতিক শুচিতার তাগিদেই এই তাণ্ডব, নাকি এর পেছনে স্থানীয় চাঁদাবাজ চক্র বা প্রতিদ্বন্দ্বী ব্যবসায়িক স্বার্থ জড়িত।

কুষ্টিয়া জেলার সাংবাদিক মহল ও সোশ্যাল মিডিয়ার আলোচনায় উঠে এসেছে আরেকটি দিক: মহিষাডাঙ্গা-বিত্তিপাড়া এলাকাটি দীর্ঘদিন ধরে কিছু প্রভাবশালী মহলের নজরে ছিল। মহাসড়কের পাশে সরকারি খাস জমিতে গড়ে ওঠা এসব দোকান থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায়ের অভিযোগ আছে। একটি তত্ত্ব অনুযায়ী, সাম্প্রতিক সময়ে হোটেল মালিকদের সঙ্গে চাঁদাবাজ গোষ্ঠীর বিরোধের জের ধরেই হঠাৎ করে “তৌহিদি জনতা” নামে সাধারণ জনগণকে উস্কে দিয়ে এই হামলা চালানো হয়, যাতে বৈধতার মোড়কও দেওয়া যায়। যদিও এ বিষয়ে নিশ্চিত প্রমাণ নেই, কিন্তু নারী কর্মীদের ওপর অনৈতিকতার অভিযোগ তোলা যে অত্যন্ত সেনসিটিভ ও স্পর্শকাতর একটি ইস্যু, যা জনতাকে দ্রুত ক্ষিপ্ত করতে পারে, তা এই গোষ্ঠী ভালো করেই জানত বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

নারীকর্মীদের ভূমিকা ও বর্তমান অবস্থা

এই ঘটনার কেন্দ্রে রয়েছেন হোটেলগুলোর নারী কর্মচারীরা, যাদের কাজকে কেন্দ্র করেই পুরো অভিযোগ ও উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। মহিষাডাঙ্গার এসব ছোট খাবার হোটেলে যাঁরা রান্না, পরিবেশন বা পরিষ্কার-এর কাজ করতেন, তাদের বেশিরভাগই নিন্মবিত্ত পটভূমির সাধারণ নারী; কেউ কারও স্ত্রী, কারও মা, কারও কন্যা, যারা পরিবারের আর্থিক চাহিদা মেটাতে স্বল্প বেতনে এই পেশা বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন।

অভিযোগকারীদের দাবি অনুযায়ী, এদের অনেকেই নাকি দিনের বেলা রান্নার কাজ আর গোপনে দেহ ব্যবসায় লিপ্ত ছিলেন । কিন্তু হামলার শিকার এক মাঝবয়সী কর্মচারী ক্ষোভের সঙ্গে জানান, “আমরা পেটের দায়ে হোটেলে কাজ করি, কিন্ত আমাদেরকে বেশ্যা বানিয়ে দিলো ওরা”, যা ওই নারীদের সামাজিক অপমানের দিকটিও তুলে ধরে। অবশ্য এই বক্তব্য গণমাধ্যমে সরাসরি প্রচারিত হয়নি, তবে স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে আলাপে এমন অভিব্যক্তি উঠে এসেছে।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, পুলিশের তথ্য অনুযায়ী ঘটনার কয়েকদিন আগেই এসব হোটেলে এক দফা অভিযান চালানো হয়েছিল। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান জানান, কিছুদিন আগেই ওই হোটেলগুলোর একটি থেকে চারজন নারীকে আটক করে আদালতে পাঠানো হয় এবং হোটেল মালিকদের ৫০ বছরের কম বয়সী নারী কর্মচারী না রাখতে সতর্ক করা হয়েছিল। অর্থাৎ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিজেও স্বীকার করছে যে নারীকর্মীদের উপস্থিতি এবং তাঁদের সম্পর্কিত কর্মকাণ্ড সন্দেহের তালিকায় ছিল। তবে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, আটক নারীরা অল্পদিন জেল খেটে জামিনে বেরিয়ে আসেন এবং আবার একই কাজে জড়িয়ে পড়েন। আইনের ফাঁকফোকর ও দুর্বল প্রয়োগের কারণে বাস্তবে পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।

হামলার পরপরই যেসব নারী কর্মী ওই হোটেলগুলোতে কর্মরত ছিলেন তারা আতঙ্কে এলাকা ছেড়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। সামাজিকভাবে তাদেরকে হেয় নজরে দেখা শুরু হওয়ায় অনেকেই নিজ গ্রাম বা এলাকা থেকে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। কাজের জায়গা পুড়ে যাওয়ায় তারা এখন বেকার এবং আয়ের পথ বন্ধ।

উপরন্তু “দেহ ব্যবসায় জড়িত” বলে কলঙ্কের দাগ তাদের পিছু নিয়েছে, যা ভবিষ্যতে ওই নারীদের জন্য মর্যাদাপূর্ণ কাজ জোটানো বা সমাজে স্বাভাবিকভাবে বসবাস করাকে কঠিন করে তুলবে বলে নারীনেত্রীরা আশঙ্কা করছেন। মানবাধিকার কর্মীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে অভিযোগের সত্য-মিথ্যা বিচার না করেই যেভাবে নারীদের ওপর চরম আক্রমণ এবং অপমান করা হয়েছে, তা কর্মজীবী নারীদের নিরাপত্তা ও অধিকার হরণের শামিল। স্থানীয় নারী সংগঠনগুলো এ বিষয়ে এখনো প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও ভিতরে ভিতরে তারা ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

‘তৌহিদি জনতা’: কারা এই ন্যায়বিচারের দাবিদার?

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সামাজিক-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে “তৌহিদি জনতা” এক পরিচিত শব্দযুগল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এটি কোনো সংগঠনের আনুষ্ঠানিক নাম নয়, বরং ধর্মীয় আবেগে উদ্বুদ্ধ স্বতঃস্ফূর্ত জনগোষ্ঠী বোঝাতে এ শব্দ প্রয়োগ করা হয়। সাধারণত ইসলামী মূল্যবোধ রক্ষার দাবিতে যখন কোন বিক্ষোভ বা প্রতিরোধ গড়ে ওঠে, অংশগ্রহণকারীরা নিজেদেরকে তৌহিদি জনতা (ঈশ্বরের একত্বে বিশ্বাসী জনগণ) হিসেবে অভিহিত করে থাকে। কুষ্টিয়ার ঘটনাতেও হামলাকারীরা এই পরিচয়ই ব্যবহার করেছে। তবে প্রশ্ন উঠছে, সত্যিই কি এটি পুরোপুরি স্বতঃস্ফূর্ত জনতার ক্ষোভ ছিল, নাকি পর্দার আড়ালে কোনো সংগঠিত দল বা গোষ্ঠী তা উস্কে দিয়েছে?

প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায় জানা যায়, মহিষাডাঙ্গায় হামলায় অংশ নেওয়া লোকজনের বেশ কয়েকজন কাছের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বা স্থানীয় মাদ্রাসার তরুণ ছিল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘটনার দিন সন্ধ্যায় কিছু আইডি থেকে লাইভ ভিডিও প্রচার করে এই **“অসামাজিক কার্যকলাপ ধ্বংসের অভিযান”**কে অভিনন্দন জানানো হয় এবং এতে বিশ্ববিদ্যালয়-পড়ুয়া কয়েকজনকে উচ্ছ্বসিত দেখা গেছে।

একটি ভাইরাল ফেসবুক পোস্টে দাবি করা হয়, “আজকে একটা কাজ করে ২০০ টাকা পেয়েছি”, যা ইঙ্গিত করে যে কেউ একজন পতিতা সেজে ভেতরে গিয়ে প্রমাণ সংগ্রহ করেছে বা প্রতীকী শাস্তি দিয়েছে – যদিও এর সত্যতা নিশ্চিত নয়। আরেকটি পোস্টে “বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরা আগেও ১১ মাইল এলাকায় হোটেলে অভিযান চালিয়েছে” বলে উল্লেখ ছিল, যা আরো প্রমাণ করে যে শিক্ষিত যুবকরাও এই অভিযানে সম্পৃক্ত ছিলেন। কেউ কেউ ধারণা করছেন যে স্থানীয় ইসলামপন্থী রাজনীতির সাথে জড়িত ছাত্রসংগঠন বা ধর্মীয় সংগঠন নেপথ্যে থেকে জনগণকে উত্তেজিত করেছে।

এই ঘটনার কয়েকদিন আগে ২৩ মার্চ গাজীপুরে ভোগড়া এলাকায় একদল “স্থানীয় তৌহিদি জনতা” ঠিক একই কায়দায় একটি আবাসিক হোটেলে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ চালিয়েছিল, সেখানেও অভিযোগ ছিল অসামাজিক কার্যকলাপ। আবার ঘটনার পরদিনই সিলেট সহ কয়েকটি জেলায় ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভের আড়ালে মার্কিন ফাস্টফুড চেইন দোকান ভাঙচুর ও লুটপাটের খবরও এসেছে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে দেশে ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে আইন নিজ হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে।

এর পেছনে কোথাও কোথাও সংগঠিত রাজনৈতিক শক্তির মদদও থাকতে পারে। বিশেষ করে নির্বাচনের প্রাক্কালে কিংবা কোনো বড় আন্দোলনের আগে এমন ঘটনা ঘটিয়ে জনমতকে অন্যদিকে সরিয়ে দেওয়া বা সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করার কৌশল হিসেবে অতীতেও ব্যবহৃত হয়েছে। তবে কুষ্টিয়ার ঘটনার ক্ষেত্রে সরাসরি কোনো রাজনৈতিক দলের নাম আসেনি। স্থানীয়ভাবে ক্ষমতাসীন দল ও প্রধান বিরোধী দলের নেতারাও এ নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য থেকে বিরত থেকেছেন, সম্ভবত বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায়।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা ও প্রতিক্রিয়া

এই ঘটনার আগে-পরে পুলিশের ভূমিকা ও অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। একদিকে পুলিশ স্বীকার করছে যে উক্ত এলাকা সম্পর্কে তাদের কাছে অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগ অনেকদিন ধরেই ছিল এবং “দুই বছর ধরে প্রকাশ্যে অসামাজিক কার্যকলাপ হচ্ছিল” বলে তথ্যও রয়েছে। তাঁরা কয়েক দফা সতর্কও করেছেন এবং সর্বশেষ ঘটনাচক্রে হামলার অল্পদিন আগে চারজনকে ধরে নিয়ে গিয়ে মামলাও করেছেন। কিন্তু এর পরেও কেন এসব হোটেল চালু রইল বা অসামাজিক কার্যকলাপ পুরোপুরি বন্ধ হলো না, সেই প্রশ্নের সন্তোষজনক উত্তর মেলেনি। বরং এলাকাবাসীর অভিযোগ, “প্রশাসনের নাকের ডগায় অনৈতিক কাজ হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি” – যা তাদের ক্ষোভকে বাড়িয়ে দিয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে হোটেল মালিকদের শুধু কম বয়সী নারী না রাখার মৌখিক পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল, যা সমস্যার আসল মূলে আঘাত হানতে যথেষ্ট ছিল না বলেই প্রতীয়মান হয়।

হামলার পর পুলিশের ভূমিকা ছিল দু’দিক থেকে – এক, হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ; দুই, হোটেলগুলোর অনৈতিক কার্যক্রমের বিষয়ে পুনরায় অভিযান চালানো। ইবি থানার ওসি মেহেদী হাসান জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং বর্তমানে অবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে। তিনি আরও বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে কারা ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগে জড়িত ছিল তাদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে । পুলিশের পক্ষ থেকে অজ্ঞাতনামা বহু জনতার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানা গেছে, যদিও এখন পর্যন্ত কোনো হামলাকারী গ্রেপ্তারের খবর মেলেনি (আনুষ্ঠানিকভাবে না জানালেও, স্থানীয়ভাবে প্রচার ছিল যে হামলাকারীরা সংখ্যায় অনেক এবং তাদের চিহ্নিত করা কঠিন)।

অন্যদিকে, ঘটনার পরপরই পুলিশ নিজেই আবার ওই এলাকার হোটেলগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান শুরু করে। সূত্রমতে, ৭ এপ্রিল রাতেই ইবি থানা পুলিশ বিত্তিপাড়া সংলগ্ন শেকম মণ্ডলের হোটেলে গোপন অভিযান চালিয়ে দুইজন মাঝবয়সী নারী, একজন খদ্দের ও হোটেল-মালিক শেকমকে হাতেনাতে আটক করে। পুলিশের দাবি, এতে অসামাজিক কার্যকলাপের ব্যাপারে স্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে এবং ধৃতদের বিরুদ্ধে পতিতাবৃত্তি সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা করা হয়েছে। আরও জানা যায়, মহাসড়ক沿線 প্রায় ৫০টির মত হোটেলের মধ্যে ৬-৭টি হোটেল দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে এ ধরনের অবৈধ দেহ ব্যবসা চালিয়ে আসছিল এবং এর সঙ্গে প্রভাবশালী কিছু দালাল জড়িত ।

আগেও কয়েকবার অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হলেও মাসখানেকের মধ্যে সংশ্লিষ্টরা জামিনে মুক্তি পেয়ে পুনরায় একই কাজে জড়িয়ে পড়ে – যা থেকে বোঝা যায় শুধু গ্রেফতারই সমস্যার স্থায়ী সমাধান ছিল না। পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এ ঘটনার পর কঠোর বার্তা দিয়েছেন যে, দেশের কোথাও জনতা নিজের হাতে আইন তুলে নিলে তা বরদাস্ত করা হবে না এবং দোষীদের গ্রেপ্তার করা হবে। পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সিলেট ও কুষ্টিয়ার মতো ঘটনাগুলোর ভিডিও ফুটেজ ও অন্যান্য তথ্য বিশ্লেষণ করে জড়িতদের চিহ্নিত করা হচ্ছে এবং শিগগিরই আইনের আওতায় আনা হবে ( ।

পর্যালোচনা: নেপথ্যের কারণ ও ভবিষ্যৎ উদ্বেগ

মহিষাডাঙ্গার এই ঘটনা বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সামাজিক বাস্তবতার একটি জটিল চিত্র উপস্থাপন করেছে, যেখানে একদিকে গ্রামীণ জনপদে শ্রমজীবী নারীদের কর্মসংস্থানের প্রশ্ন, আরেকদিকে ধর্মীয়-নৈতিক মূল্যবোধ রক্ষার দাবিতে নৈরাজ্য – দুইয়ের সংঘাত স্পষ্ট। আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে যেভাবে পুরুষতান্ত্রিক উন্মাদনায় নারীদের কর্মক্ষেত্র পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে, তা আইনের শাসন ও মানবাধিকার পরিপন্থী। ফলে উভয় দিক থেকেই এই ঘটনাটি উদ্বেগজনক বার্তা দেয়।

অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, যদি সত্যিই অসামাজিক কার্যকলাপ হচ্ছিল, তবে অনেক আগে থেকেই পুলিশ-প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারত। তারা সেটি না করায় জনগণের একাংশের মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আস্থার ঘাটতি স্পষ্ট হয়েছে। এই ফাঁকটাই পূরণ করেছে স্বঘোষিত “তৌহিদি জনতা”, যারা নিজেদের বিচার নিজেদের হাতে করেছে। কিন্তু এতে বড় ধরনের সম্পদনাশ ও সম্ভাব্য প্রাণহানির ঝুঁকি তৈরি হয়েছে (ভাগ্যক্রমে সেদিন কেউ গুরুতর আহত বা নিহত হননি)। বিশ্লেষকদের মতে, এভাবে চলতে থাকলে যে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী কেবল সন্দেহের বশে আইন হাতে তুলে নিয়ে সহিংসতা চালাতে উৎসাহিত হবে, যা সমাজে নৈরাজ্য বাড়াবে।

নারী অধিকার ও সামাজিক ন্যায়বিচারের দৃষ্টিকোণ থেকেও ঘটনাটি ভাবিয়ে তুলেছে অনেককে। কর্মজীবী নিম্নআয়ের নারীরা অনেক ক্ষেত্রেই সমাজের সহজ শিকার। এখানে অভিযোগ সত্য-মিথ্যা যা-ই হোক, শেষ পর্যন্ত ভুগেছেন ওই নারী কর্মীরাই – যারা চাকরি হারিয়েছেন, সামাজিক অপমানের ভাগী হয়েছেন এবং আইনের চোখেও আসামি হয়েছেন (যদি তারা সত্যিই দোষী না হয়ে থাকেন, তবে এটা বড় অন্যায় হবে)। এ ঘটনা অন্য এলাকাগুলিতেও নারীদের জনসমক্ষে কাজ করার ক্ষেত্রে আতঙ্ক ও দ্বিধা তৈরি করতে পারে, বিশেষ করে রক্ষণশীল তল্লাটে। একটি দুর্বৃত্ত চক্র বা ধর্মীয় গোষ্ঠী যদি চায়, তারা এই উদাহরণ দেখিয়ে যেকোনো কর্মক্ষেত্রে নারীদের উপস্থিতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে, যা লিঙ্গ-বৈষম্যের দেয়ালকে আরও মজবুত করবে।

অবশ্য মহিষাডাঙ্গার ঘটনার পর প্রশাসন নড়েচড়ে বসেছে। জেলা প্রশাসন থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের কথা শোনা গেছে, যারা খতিয়ে দেখবে যে কোন কোন হোটেলে কী ধরনের কার্যকলাপ চলত এবং কার অবহেলায় এতদিন এসব চলতে পেরেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও এলাকায় দীর্ঘমেয়াদি নজরদারির আশ্বাস দিয়েছে। স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের ধারণা, এখন কিছুদিন কড়াকড়ি থাকবে, তবে সময়ের সাথে সাথে যদি নজরদারিতে ঢিল দেয়া হয়, তাহলে আবারও অসাধু চক্র সক্রিয় হতে পারে। তাই দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের জন্য দরকার সামগ্রিকভাবে সমস্যাটির সামাজিক ও অর্থনৈতিক মূল কারণ চিহ্নিত করে পদক্ষেপ নেওয়া। দরিদ্র নারীরা কেন এই ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ কাজের দিকে ঠেলে যান, স্থানীয় যুবকদের মাঝে কেন অবৈধ চাহিদা তৈরি হয় – এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে সমাধান করা দরকার।

সংক্ষেপে, কুষ্টিয়ার মহিষাডাঙ্গা-বিত্তিপাড়ার হোটেল-কাণ্ড আমাদের সামনে কয়েকটি বাস্তবতা তুলে ধরেছে: (১) আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রশাসনের ব্যর্থতা জনতার মাঝে নিজেরাই বিচার করার প্রবণতা বাড়াচ্ছে; (২) নারীদের প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিতে এখনো গভীর কুসংস্কার ও পৌরুষ কর্তৃত্ববাদ কাজ করছে, যার খেসারত বহু দরিদ্র নারীকে প্রাণের ঝুঁকি ও মানহানি দিয়ে দিতে হচ্ছে; এবং (৩) চাঁদাবাজি, ক্ষমতার দ্বন্দ্ব ও ধর্মীয় রাজনীতি মিলে কখনো কখনো ঘটনাগুলোকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, স্বচ্ছ ও দ্রুত প্রশাসনিক পদক্ষেপ, এবং ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ ও সম্প্রদায়ের সাথে সংলাপের মাধ্যমে ভ্রান্ত ধারণা দূর করা – এই তিনটি দিকেই জোর দিতে হবে বলে বিশ্লেষকরা পরামর্শ দেন।

সংঘর্ষ-সহিংসতাহীন সুস্থ সামাজিক পরিবেশ ও নারীদের নিরাপদ কর্মস্থিতি নিশ্চিত করতে মহিষাডাঙ্গার ঘটনার সঠিক বিচার ও প্রতিকার নিশ্চিতে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ প্রত্যাশা করছেন সবাই। স্থানীয় এক প্রবীণ ব্যক্তির কথায়, “অন্যায় যদি হয়ে থাকে, আইন অনুযায়ী শাস্তি হোক; কিন্তু আইন নিজেদের হাতে তুলে নিয়ে জঙ্গলের শাসন কায়েম করা কোনভাবেই উচিত নয়” – এই বোধটা সমাজের সকল স্তরে জাগ্রত হওয়াই এখন সবচেয়ে বড় প্রয়োজন।

অন্যান্য সূত্রসমূহঃ (খাবারের হোটেলের আড়ালে অনৈতিক কর্মকাণ্ড, আগুন দিল জনতা) (নারী কর্মচারীরা কাজ করেন তাই ৩টি খাবার হোটেলে আগুন তৌহিদি জনতার) (Tauhidi Janata sets fire to 3 food hotels employing female workers in …) (Tauhidi Janata sets fire to 3 food hotels employing female workers in …) (ভাতের হোটেলের আড়ালে যৌনতা, পুড়িয়ে দিলেন এলাকাবাসী) (কুষ্টিয়ায় হাইওয়ে খাবার হোটেল ব্যবসার আড়ালে দেহ ব্যবসা, আটক ৪)(হোটেলের আড়ালে নারীদের দিয়ে অনৈতিক কর্মকাণ্ড, আগুন দিল জনতা). (ভাতের হোটেলের আড়ালে যৌনতা, পুড়িয়ে দিলেন এলাকাবাসী) (আবাসিক হোটেল ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ | | বাংলাদেশ প্রতিদিন)

তারিখ: ০৮ এপ্রিল, ২০২৫

Click here to read this article in English

আরো খবর পড়ুন

মুর্শিদাবাদ বিক্ষোভ
ধর্ম

মুর্শিদাবাদ বিক্ষোভ: বাংলাদেশ ও ইসলামি জঙ্গি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সুপরিকল্পিত সহিংসতার অভিযোগ

সম্প্রতি মুর্শিদাবাদ জেলার সুতি, ধুলিয়ান এবং সামসেরগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি অঞ্চলে ঘটে যাওয়া সহিংসতা রাজ্যের গোয়েন্দা মহলে গভীর উদ্বেগ ও নানা

Read More »
ছায়ায় প্রতিবন্ধী নারীরা
বাংলা

নিরাপত্তাহীনতার ছায়ায় প্রতিবন্ধী নারীরা: রংপুর, হবিগঞ্জ ও পিরোজপুরে প্রতিবন্ধী নারীদের উপর যৌন সহিংসতার ভয়াবহ অভিযোগ

বাংলাদেশের তিনটি জেলার পৃথক তিনটি ঘটনায় প্রতিবন্ধী নারীদের ওপর যৌন সহিংসতার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনাগুলো একদিকে যেমন মানবাধিকারের চরম

Read More »
বিদেশী নারীকে ধর্ষণ Feni
নারী

বিদেশী নারীকে ধর্ষণ ও প্রতারণার অভিযোগে ফেনীতে মামলা, অভিযুক্ত গ্রেপ্তার

বাংলাদেশের ফেনী জেলার শর্শদি ইউনিয়নে থাইল্যান্ডের এক নারী নাগরিকের (৪০) দায়ের করা ধর্ষণ ও প্রতারণার মামলায় মোখসুদুর রহমান (৪৮) নামের

Read More »
ওয়াকফ আইন
ধর্ম

অশান্ত পশ্চিমবঙ্গ: বিতর্কিত ওয়াকফ আইন ঘিরে জ্বলছে প্রতিবাদের আগুন

ভারতের সংসদে পাস হওয়া বিতর্কিত ওয়াকফ (সংশোধন) আইন, ২০২৫-এর বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গের মালদা, মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও হুগলি জেলায় ব্যাপক

Read More »
Scroll to Top