গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় একটি হাফেজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষককে তার সাত বছরের শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করার চেষ্টার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষক আবদুল মালেক (২৫) স্থানীয়দের দ্বারা আটক হওয়ার পর পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ স্বীকার করে বলেছেন, “আমি শয়তানের ধোঁকায় পড়ে করে ফেলেছি।”
ঘটনার বিবরণ
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) মাদ্রাসায় থাকাকালীন অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষক আবদুল মালেক সাত বছরের এক শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। ঘটনার পর থেকে শিশুটি মাদ্রাসায় যেতে অনীহা প্রকাশ করতে থাকে। শনিবার (৮ মার্চ) সন্ধ্যায় শিশুটি তার পরিবারের সদস্যদের ঘটনাটি জানায়। এ খবর শুনে শিশুটির পরিবার ও স্থানীয়রা আবদুল মালেককে আটক করেন।
আবদুল মালেক প্রথমে ঘটনা অস্বীকার করলেও পরে তিনি ধর্ষণচেষ্টার কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, “আমি শয়তানের ধোঁকায় পড়ে করে ফেলেছি। এমন কাজ আমি আর কখনো করিনি। তাকে খারাপ কাজ করিনি।” তার এই স্বীকারোক্তির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ভিডিওটি ৫৪ সেকেন্ডের, যেখানে আবদুল মালেক তার অপরাধ স্বীকার করে ক্ষমা চাইছেন।
পুলিশের তদন্ত ও আইনি পদক্ষেপ
শ্রীপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শামীম আখতার জানান, অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষক আবদুল মালেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শিশুটির বাবা তার বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেছেন। বর্তমানে তাকে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষক আবদুল মালেক নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা উপজেলার লেঙ্গুরা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা এলাকার একটি হাফেজিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করছিলেন। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সত্যতা যাচাই ও আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া
ঘটনাটি স্থানীয় সম্প্রদায়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। অনেকেই শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের দাবি জানিয়েছেন। এ ধরনের ঘটনা যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়, সে জন্য কঠোর নজরদারি ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।
অভিযুক্তের স্বীকারোক্তির ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীরা ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অনেকেই শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। এ ঘটনায় শিশু সুরক্ষা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার প্রয়োজনীয়তা উঠে এসেছে। এই ঘটনা শিশু নির্যাতন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো সামনে নিয়ে এসেছে। পুলিশের তদন্ত ও আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। শিশুটির পরিবার ও স্থানীয় সম্প্রদায় ন্যায়বিচারের আশা করছেন।
প্রকাশের তারিখ: ৯ মার্চ, ২০২৫
তথ্যসূত্রঃ ইত্তেফাক, দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড
Click here to read this article in English