কুমিল্লার লালমাই উপজেলায় এক বাকপ্রতিবন্ধী তরুণীকে চিপস কিনে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ইতিমধ্যে একজন বৃদ্ধকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং অপরজনকে আটকাতে পুলিশ তদন্ত ও অভিযান চালাচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ভুক্তভোগীর বাবা লালমাই থানায় ধর্ষণের অভিযোগে দুজনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছেন।
ঘটনার বিবরণ
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে লালমাই উপজেলার বাগমারা দক্ষিণ ইউনিয়নের পোহনকুচা গ্রামের একটি নির্মাণাধীন ভবনের শ্রমিকদের থাকার কক্ষে এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওই বাকপ্রতিবন্ধী তরুণীকে উদ্ধার করে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
লালমাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিমাদ্রি খিসা ঘটনাটি নিশ্চিত করে বলেন, “বাকপ্রতিবন্ধী তরুণীর বাবা একজন চা বিক্রেতা। ঘটনার পর বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। পরে ভুক্তভোগীর বাবা পুলিশকে জানালে পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে একজনকে গ্রেপ্তার করে। অপরজনকে আটকাতে অভিযান চলছে।”
মামলার বিবরণ
মামলায় অভিযুক্ত দুই ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তারা হলেন লালমাই উপজেলার বাগমারা দক্ষিণ ইউনিয়নের পোহনকুচা গ্রামের মৃত আরব আলীর ছেলে মো. জাহাঙ্গীর (৫০) এবং মৃত রজ্জব আলীর ছেলে বাহার মিয়া (৫০)।
অভিযোগের পর পুলিশ দ্রুত অভিযান চালিয়ে মামলার ১ নম্বর আসামি মো. জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তার করে। শুক্রবার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অপর আসামি বাহার মিয়াকে আটকাতে পুলিশ তদন্ত চালাচ্ছে।
ভুক্তভোগীর পরিবারের বক্তব্য
ধর্ষণের শিকার তরুণীর খালা ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা করে বলেন, “আমার বোনের মেয়ে শারীরিক ও বাক প্রতিবন্ধী। সে প্রতিদিন সকালে বাড়ির পাশের রাস্তায় হাঁটাহাঁটি করে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বাড়ি থেকে বের হলে জাহাঙ্গীর তাকে সড়কের পাশের দুলালের দোকানে নিয়ে চিপস কিনে দেন। এরপর তাকে একটি নির্মাণাধীন ভবনের শ্রমিকদের থাকার কক্ষে নিয়ে যান। বিষয়টি জানতে পেরে আমি সকাল ৮টার দিকে ওই কক্ষে গিয়ে দেখি জাহাঙ্গীর ও বাহার মিয়া তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করছেন। আমি বাহার মিয়াকে চড়-থাপ্পড় দিই। এরপর তারা দুজনেই পালিয়ে যায়।”
পুলিশের বক্তব্য
লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, “বাকপ্রতিবন্ধী তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার ১ নম্বর আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভুক্তভোগীকে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আমরা অপর আসামিকে আটকাতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছি।”
তথ্যসূত্রঃ ইন্ডিপেন্ডেন্ট
তারিখঃ ০৮ মার্চ, ২০২৫