সিলেট মহানগরীর এয়ারপোর্ট থানাধীন এলাকায় এক মানসিক ভারসাম্যহীন তরুণীকে দলবেঁধে ধর্ষণের মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ইতিমধ্যে দুইজনকে আটক করেছে। ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দার জন্ম দিয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ ২০২৫) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এয়ারপোর্ট থানার ছড়াগাঙ রাবার বাগান এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। আটককৃত দুই আসামি হলেন শাহপরান থানার দলুইপাড়ার আনোয়ার হোসেনের ছেলে রাকিব মিয়া (২৫) এবং একই থানার উত্তর মোকামের গোল পীরেরবাজারের হাসেম মিয়ার ছেলে আব্দুর রহিম।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এয়ারপোর্ট থানাধীন এলাকায় তরুণীকে দলবেঁধে ধর্ষণের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। ভুক্তভোগী মানসিক ভারসাম্যহীন তরুণীকে উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে তাকে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার বিস্তারিত জানতে গিয়ে ভুক্তভোগী মানসিক ভারসাম্যহীন তরুণীর বাবা ঢাকা পোস্টকে বলেন, “সকালে আমার মেয়ের মোবাইল থেকে একটি ফোনকল আসে। ফোনে জানানো হয়, একটি চা বাগান এলাকায় সে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। তাকে উদ্ধার করার জন্য অনুরোধ করা হয়। পরে সিলেট এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা ওসমানী হাসপাতালে মেয়ের কাছে আসি।”
তিনি আরও জানান, তার মেয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন এবং দীর্ঘদিন ধরে তার চিকিৎসা চলছে। গত চারদিন আগে মেয়েটি বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। এরপর পরিবারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করা হলেও তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানান তিনি।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) সাইফুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে ঘটনাটি নিশ্চিত করে জানান, “ঘটনার পর ভুক্তভোগী (মানসিক ভারসাম্যহীন তরুণী)কে সিলেট এম এ জি ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে। ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে মৌখিক অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ তদন্তে নামে। রাত ১০টার দিকে দুইজনকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।”
এই ঘটনায় স্থানীয় সম্প্রদায় ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। মানসিকভাবে অসুস্থ একজন তরুণীর ওপর এই ধরনের নৃশংসতা সমাজের নৈতিক অবক্ষয়ের চিত্র তুলে ধরেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার অন্যান্য জড়িতদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ারও আশ্বাস দিয়েছে তারা।
তথ্যসূত্রঃ dhakapost
তারিখ: ১২ মার্চ ২০২৫
Click here to read this article in English